কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

আজকে আমরা প্রেসার নিয়ে জানার চেষ্টা করবো । কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত ও হাই প্রেসার কত থেকে কত তা শেয়ার করবো । কোথাও যাবেন না মনোযোগ দিয়ে পড়ুন

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

প্রিয় পাঠক, আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ  একটা টপিক নিয়ে আলোচনা করবো। টাইটেল দেখে  নিশ্চয় বুজে গেছেন কি টপিক হতে পারে। আজকে আমরা প্রেসার নিয়ে জানার চেষ্টা করবো । কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত ও হাই প্রেসার কত থেকে কত তা শেয়ার করবো ।

কোথাও যাবেন না মনোযোগ দিয়ে পড়ুন নইলে অনেক কিছু মিস করবেন।রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার আমাদের শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। একজন মানুষ সুস্থ আছেন কিনা, তার হৃদপিণ্ড ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, তা বোঝার জন্য রক্তচাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড।

অনেকেই মনে করেন শুধু বয়স্কদের রক্তচাপের সমস্যা হয়, কিন্তু বাস্তবে যেকোনো বয়সেই রক্তচাপ কম-বেশি হতে পারে। বয়সভেদে স্বাভাবিক রক্তচাপের মান আলাদা এবং কোন পর্যায় থেকে এটিকে হাই প্রেসার বলা হয়, তা সঠিকভাবে জানা খুব জরুরি। না জানলে অনেকেই সময়মতো সতর্ক হন না এবং পরবর্তীতে জটিল রোগে আক্রান্ত হন।

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত দেখুন

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

রক্তচাপ কী এবং কিভাবে মাপা হয়?

রক্তচাপ আসলে আমাদের ধমনীর ভেতরে রক্ত প্রবাহের চাপ। যখন হৃদপিণ্ড সংকুচিত হয়ে শরীরের ভেতরে রক্ত পাঠায়, তখন ধমনীর ভেতরে একটি চাপ তৈরি হয়, যেটিকে সিস্টোলিক প্রেসার বলা হয়। আর যখন হৃদপিণ্ড রক্ত পাঠানোর পর বিশ্রামে থাকে, তখন ধমনীর চাপকে বলা হয় ডায়াস্টোলিক প্রেসার। এই দুইটি সংখ্যার মাধ্যমেই রক্তচাপ নির্ণয় করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, 120/80 mmHg মানে হলো সিস্টোলিক চাপ 120 এবং ডায়াস্টোলিক চাপ 80।

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

আজকাল ডিজিটাল মেশিন দিয়ে খুব সহজেই রক্তচাপ মাপা যায়। চিকিৎসকের কাছে গেলে তারা হাতের কফ লাগিয়ে ম্যানুয়াল যন্ত্র দিয়েও মাপেন। সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপতে হলে শান্ত পরিবেশে বসে অন্তত ৫ মিনিট বিশ্রামের পর মাপা উচিত।

কোন বয়সে রক্তচাপ কত হওয়া স্বাভাবিক?

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপের মান কিছুটা পরিবর্তিত হয়। ছোট শিশুদের রক্তচাপ সাধারণত কম থাকে, আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। নিচে বয়সভিত্তিক স্বাভাবিক রক্তচাপের সীমা দেওয়া হলো:

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

  • শিশু (১–১২ বছর): সাধারণত 90/60 থেকে 110/70 mmHg স্বাভাবিক ধরা হয়। এই বয়সে শিশুদের রক্তচাপ একটু ওঠানামা করলেও তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে অতিরিক্ত কম বা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • কিশোর-কিশোরী (১৩–১৯ বছর): এ বয়সে 100/65 থেকে 120/80 mmHg স্বাভাবিক ধরা হয়। যেহেতু এ সময় দেহে হরমোন পরিবর্তন ঘটে, তাই হঠাৎ রক্তচাপ বাড়তে বা কমতে পারে।
  • প্রাপ্তবয়স্ক (২০–৪০ বছর): একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ 110/70 থেকে 120/80 mmHg। এ সময় জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • মধ্যবয়সী (৪০–৬০ বছর): বয়স বাড়ার কারণে রক্তচাপ সাধারণত একটু বেশি হয়। তাই 115/75 থেকে 130/85 mmHg পর্যন্ত স্বাভাবিক ধরা যেতে পারে।
  • বয়স্ক (৬০ বছরের ওপরে): এ বয়সে 120/80 থেকে 140/90 mmHg পর্যন্ত স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। তবে 140/90 এর বেশি হলে সেটিকে হাই প্রেসার বলা হয়।

হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কত থেকে শুরু হয়?

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (AHA) অনুযায়ী রক্তচাপের মাত্রা নিচের মতো ভাগ করা হয়।

  • স্বাভাবিক রক্তচাপ: 120/80 mmHg এর নিচে থাকলে একে স্বাভাবিক ধরা হয়।
  • প্রি-হাইপারটেনশন (ঝুঁকিপূর্ণ): সিস্টোলিক 120–139 বা ডায়াস্টোলিক 80–89 mmHg হলে এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। এই অবস্থায় জীবনযাত্রা ঠিক না করলে ভবিষ্যতে হাই প্রেসার হতে পারে।
  • হাইপারটেনশন স্টেজ 1: সিস্টোলিক 140–159 বা ডায়াস্টোলিক 90–99 mmHg হলে এটিকে প্রথম ধাপের হাই প্রেসার বলা হয়।
  • হাইপারটেনশন স্টেজ 2: সিস্টোলিক 160 বা তার বেশি অথবা ডায়াস্টোলিক 100 বা তার বেশি হলে এটি মারাত্মক পর্যায়ের হাই প্রেসার।

অর্থাৎ, 140/90 mmHg এর উপরে গেলে একে হাই প্রেসার ধরা হয় এবং এ অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

হাই প্রেসারের ঝুঁকি কেন বেশি?

হাই প্রেসারকে Silent Killer বলা হয় কারণ অনেক সময় এটি কোনো উপসর্গ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে শরীরে ক্ষতি করে যায়। অনেকেই টের পান না যে তাদের রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছে, ফলে সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় জটিল রোগে আক্রান্ত হন। উচ্চ রক্তচাপের কারণে।

  •  হৃদপিণ্ড অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে গিয়ে দুর্বল হয়ে যায় এবং হার্ট অ্যাটাক বা হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  •  ব্রেইনের রক্তনালীতে চাপ বেড়ে স্ট্রোক হতে পারে।
  •  কিডনির ক্ষতি হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ হতে পারে।
  •  চোখের রক্তনালীতে চাপ পড়ায় দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
  •  ধমনীগুলো শক্ত হয়ে যায়, ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়।

তাই হাই প্রেসারকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়, বরং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেতন হতে হবে।

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

কীভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়?

হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। এর জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন।নিচে নিয়ম গুলো দেওয়া হলো:

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • লবণ কম খান: অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়ায়। তাই দৈনন্দিন খাবারে লবণের পরিমাণ কমানো জরুরি।
  • সুষম খাবার গ্রহণ করুন: বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল, ডাল এবং আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
  • চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন: ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার রক্তচাপ বাড়ায়।
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন: এগুলো রক্তচাপের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
  • মানসিক চাপ কমান: মানসিক চাপ ও অনিদ্রা রক্তচাপ বাড়ায়, তাই নিয়মিত বিশ্রাম ও ঘুম খুব জরুরি।

শেষকথা,

প্রিয় পাঠক,বয়স ভেদে স্বাভাবিক রক্তচাপের একটি সীমা আছে, তবে 140/90 mmHg এর বেশি হলে একে উচ্চ রক্তচাপ ধরা হয়। হাই প্রেসার দীর্ঘমেয়াদি মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে।

তাই যেকোনো বয়সেই নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা, সঠিক জীবনযাত্রা অনুসরণ করা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবার জন্য অত্যন্ত জরুরি। আশাকরি আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে বুজতে পেরেছেন কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত।

ডিসক্লেইমার: এই ব্লগে দেওয়া তথ্যগুলো শুধুমাত্র শিক্ষামূলক এবং সাধারণ সচেতনতার উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি কোনো চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। আপনার রক্তচাপ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা বা প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই নিবন্ধিত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

Disclaimer
We strive to provide accurate information, but we cannot guarantee that all details are always fully updated.

Affiliate Disclosure
This post may contain affiliate links. We may receive a commission if you make a purchase through these links, at no extra cost to you. For more details, please visit our Disclaimer Page.

আইটি বিতান
Nilasha Barua

হাই! আমি নিলাশা, প্রযুক্তি, গ্যাজেট রিভিউ এবং নানা ধরনের বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখি। পাঠকের জন্য সহজ, প্রাসঙ্গিক এবং তথ্যবহুল কনটেন্ট তৈরি করাই আমার প্রাথমিক উদ্দেশ্য।নতুন তথ্য শেয়ার করতে এবং পাঠকদের সাথে জ্ঞান ভাগাভাগি করতে পছন্দ করি।

Post a Comment