Vivo iQOO Neo11 (China) দাম কত টাকা ও ফুল Specifications
Vivo iQOO Neo11 (China) দাম কত টাকা । Vivo iQOO Neo11 চীনা বাজারে ২০২৫ সালের ৩০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এই ফোনটি মূলত পারফরম্যান্স, ডিসপ্লে কোয়ালিটি ও ব্যাটারি লাইফের জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত। নিচে Vivo iQOO Neo11 (China) দাম কত টাকা ও ফোনটির সব তথ্য বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।
ডিজাইন ও গঠন
ফোনটির বডি অত্যন্ত শক্তপোক্তভাবে তৈরি। সামনে গ্লাস, মাঝখানে অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় ফ্রেম এবং পিছনে ফাইবারগ্লাস ব্যাক ব্যবহার করা হয়েছে। ফোনটির ওজন ২১০ থেকে ২১৬ গ্রাম এবং এর মাত্রা ১৬৩.৪ x ৭৬.৭ x ৮.১ মিলিমিটার। এটি IP68 এবং IP69 সার্টিফায়েড, অর্থাৎ ধুলাবালি ও পানির চাপেও এটি টিকে থাকতে সক্ষম। এমনকি ১.২ মিটার উচ্চতা থেকে পড়লেও এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
ডিসপ্লে
Vivo iQOO Neo11 এ রয়েছে ৬.৮২ ইঞ্চি LTPO AMOLED ডিসপ্লে, যা ১ বিলিয়ন রঙ সাপোর্ট করে। স্ক্রিনের রিফ্রেশ রেট ১৪৪ হার্জ, ফলে গেমিং ও স্ক্রলিংয়ে অভিজ্ঞতা হয় একদম মসৃণ। ডিসপ্লেটি HDR10+ সমর্থন করে এবং এতে রয়েছে ২৫৯২ হার্জ PWM ডিমিং প্রযুক্তি। রেজোলিউশন ১৪৪০ x ৩১৬৮ পিক্সেল, যা প্রায় ৫১০ পিপিআই ডেনসিটি প্রদান করে। স্ক্রিনের সুরক্ষায় ব্যবহৃত হয়েছে শক্ত Rock Glass এবং এতে অ্যান্টি-রিফ্লেকটিভ কোটিংও রয়েছে।
পারফরম্যান্স ও অপারেটিং সিস্টেম
ফোনটি চলছে Android 16-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি OriginOS 6 অপারেটিং সিস্টেমে। পারফরম্যান্সের দিক থেকে এটি অত্যন্ত শক্তিশালী, কারণ এখানে ব্যবহৃত হয়েছে Qualcomm Snapdragon 8 Elite (3nm) চিপসেট। প্রসেসর হিসেবে এতে রয়েছে Octa-core CPU (২x৪.৪৭ GHz Oryon V2 Phoenix L + ৬x৩.৫৩ GHz Oryon V2 Phoenix M) এবং GPU হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে Adreno 830। এই কনফিগারেশন গেমিং ও মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্য অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদান করে।
মেমোরি ও স্টোরেজ
ফোনটিতে মেমোরি এক্সপেনশন বা মেমোরি কার্ড স্লট নেই। তবে অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ ও র্যামের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি। বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টে ফোনটি পাওয়া যায় ১২GB/২৫৬GB, ১৬GB/২৫৬GB, ১২GB/৫১২GB, ১৬GB/৫১২GB এবং ১৬GB/১TB। এত বড় স্টোরেজ এবং RAM থাকায় ব্যবহারকারীরা নিশ্চিন্তে হেভি গেম, ভিডিও বা অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।
ক্যামেরা
Vivo iQOO Neo11 এ রয়েছে ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ। মূল ক্যামেরা ৫০ মেগাপিক্সেল, f/1.8 অ্যাপারচারসহ, যেখানে রয়েছে PDAF এবং OIS প্রযুক্তি। সেকেন্ডারি ক্যামেরা ৮ মেগাপিক্সেল, যা ১১৯° আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল কভার করে। ক্যামেরা ফিচারের মধ্যে রয়েছে LED ফ্ল্যাশ, প্যানোরামা ও HDR। ভিডিও রেকর্ডিংয়ে এটি ৮কে, ৪কে ও ১০৮০পি সাপোর্ট করে, সাথে আছে জাইরো-EIS স্থিতিশীলতা।
সেলফি ক্যামেরা ১৬ মেগাপিক্সেল, f/2.5 লেন্সসহ, যা ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ড করতে সক্ষম।
সাউন্ড ও অডিও
ফোনটিতে স্টেরিও স্পিকার ব্যবহৃত হয়েছে, ফলে সাউন্ড কোয়ালিটি বেশ ভালো। তবে ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক নেই, যা অনেকের জন্য অসুবিধা হতে পারে। এছাড়া এতে FM রেডিওও অনুপস্থিত।
কানেক্টিভিটি
Vivo iQOO Neo11 আধুনিক সব কানেক্টিভিটি ফিচার সাপোর্ট করে। এতে রয়েছে Wi-Fi 802.11 a/b/g/n/ac/6/7 (ডুয়াল ব্যান্ড), Bluetooth 5.4 সহ aptX HD, aptX Adaptive, aptX Lossless ও LHDC 5 সাপোর্ট। GPS সিস্টেমও অত্যন্ত উন্নত এতে একাধিক স্যাটেলাইট সিস্টেম যেমন GLONASS, BDS, GALILEO এবং QZSS ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়া ফোনটিতে NFC ও ইনফ্রারেড পোর্টও রয়েছে।
ব্যাটারি ও চার্জিং
ফোনটির অন্যতম আকর্ষণ হলো এর ৭৫০০ mAh ব্যাটারি। এটি Si/C Li-Ion টাইপ, যা দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। চার্জিংয়ের দিক থেকেও এটি অসাধারণ ১০০ ওয়াট তারযুক্ত চার্জিং, ৪৪ ওয়াট UFCS এবং ৫৫ ওয়াট PD3.0/PPS সাপোর্ট করে। ফলে কয়েক মিনিটেই বড় ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হয়।
সেন্সর ও অতিরিক্ত ফিচার
Vivo iQOO Neo11 এ ইন-ডিসপ্লে আলট্রাসোনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রয়েছে অ্যাকসেলরোমিটার, গাইরো, প্রক্সিমিটি এবং কম্পাস সেন্সর।
নেটওয়ার্ক সাপোর্ট
এই ফোনটি GSM, HSPA, LTE এবং 5G নেটওয়ার্ক সাপোর্ট করে। ৫জি ব্যান্ড হিসেবে এতে রয়েছে ১, ৩, ৫, ৭, ৮, ১৮, ২৬, ২৮, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪৮, ৬৬, ৭৭ ও ৭৮ (SA/NSA) ব্যান্ড, যা দ্রুতগতির ইন্টারনেট অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
রঙ ও মডেল
ফোনটি চারটি রঙে পাওয়া যাবে কালো, সাদা, কমলা ও নীল। এর মডেল নাম্বার হলো V2520A।
প্রত্যাশিত মূল্য ও প্রাপ্যতা
Vivo iQOO Neo11 ইতিমধ্যে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য মূল্য প্রায় ৳৫০,০০০।
সুবিধা (Pros)
এই ফোনের বড় সুবিধা হলো এর প্রিমিয়াম বিল্ড কোয়ালিটি, ১৪৪ হার্জ AMOLED ডিসপ্লে, Snapdragon 8 Elite চিপসেট, স্টেরিও স্পিকার, NFC সাপোর্ট এবং ৮কে ভিডিও রেকর্ডিং সক্ষমতা। এছাড়া ৭৫০০ mAh ব্যাটারি ও ১০০ ওয়াট চার্জিংও এটিকে বিশেষ করে তুলেছে।
অসুবিধা (Cons)
অন্যদিকে, কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। ফোনটিতে শুধুমাত্র ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে, ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক নেই, এবং FM রেডিওও অনুপস্থিত। তবে সামগ্রিকভাবে Vivo iQOO Neo11 একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ও আধুনিক স্মার্টফোন, যা গেমার এবং পাওয়ার ইউজারদের জন্য আদর্শ একটি বিকল্প হতে পারে।
সব দিক বিবেচনা করলে Vivo iQOO Neo11 (China) নিঃসন্দেহে ২০২৫ সালের অন্যতম শক্তিশালী ও আকর্ষণীয় স্মার্টফোন গুলোর একটি। প্রিমিয়াম ডিজাইন, দুর্দান্ত ডিসপ্লে কোয়ালিটি, ফ্ল্যাগশিপ লেভেলের Snapdragon 8 Elite চিপসেট এবং বিশাল ৭৫০০ mAh ব্যাটারি সব মিলিয়ে এটি পারফরম্যান্স প্রেমী ব্যবহারকারীদের জন্য এক নিখুঁত পছন্দ হতে পারে। যদিও ক্যামেরা সংখ্যা ও অডিও জ্যাকের অনুপস্থিতি কিছুটা সীমাবদ্ধতা তৈরি করে, তবু ও সামগ্রিকভাবে এটি একটি পাওয়ারফুল, ব্যালান্সড এবং দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সের নিশ্চয়তা দেওয়া স্মার্টফোন।
.png)