মাইগ্রেন কি ? মাইগ্রেন এর লক্ষণ কি কি ? মাইগ্রেন এর ব্যথা কমানোর সহজ উপায়

আজকের আর্টিকেলে মাইগ্রেন কি ? মাইগ্রেন এর লক্ষণ কি কি ? এইসব নিয়ে বিস্তারিত শেয়ার করবো। কোথাও যাবেন না সাথেই থাকুন। আমাদের অনেকের কাছেই মাইগ্রেন,

মাইগ্রেন কি ? মাইগ্রেন এর লক্ষণ কি কি ? মাইগ্রেন এর ব্যথা কমানোর সহজ উপায়

প্রিয় পাঠক, কেমন আছেন সবাই? আজকের আর্টিকেলে মাইগ্রেন কি ? মাইগ্রেন এর লক্ষণ কি কি ? এইসব নিয়ে বিস্তারিত শেয়ার করবো। কোথাও যাবেন না সাথেই থাকুন।  আমাদের অনেকের কাছেই মাইগ্রেন একটা পরিচিত শব্দ।

কিন্তু সত্যিই কি আমরা জানি মাইগ্রেন কি? এটি কেবল সাধারণ মাথাব্যথা নয় বরং এমন একটি স্নায়বিক সমস্যা, যা মানুষের কাজের গতি, মেজাজ, এমনকি দৈনন্দিন জীবনকে পর্যন্ত প্রভাবিত করে

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানবো মাইগ্রেন এর লক্ষণ, কারণ এবং মাইগ্রেন এর ব্যাথা কমানোর উপায় নিয়ে, যেন আপনি নিজে সচেতন হতে পারেন এবং অন্যদেরও সাহায্য করতে পারেন।

মাইগ্রেন কি

মাইগ্রেন কি?

মাইগ্রেন হলো এক ধরনের নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার বা স্নায়ুবিক সমস্যা, যার প্রধান উপসর্গ হচ্ছে তীব্র মাথাব্যথা। এই ব্যথা সাধারণত মাথার এক পাশে শুরু হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে বমি ভাব, আলো বা শব্দে সংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে ব্যক্তি কিছু করতে অক্ষম হয়ে পড়েন। এটি হঠাৎ করেই শুরু হতে পারে এবং কয়েক ঘণ্টা থেকে শুরু করে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাইগ্রেন পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে হরমোন জনিত কারণে।

মাইগ্রেন এর লক্ষণ – কীভাবে বুঝবেন এটা মাইগ্রেন?

মাইগ্রেনের লক্ষণ নির্দিষ্ট নয়, তবে কিছু সাধারণ উপসর্গ রয়েছে যেগুলো প্রায় সবার মধ্যে দেখা যায়। সাধারণ মাথা ব্যথার তুলনায় মাইগ্রেন একটু আলাদা, কারণ এর আগে পরে শরীরে নানা ধরণের সংকেত দেখা দেয়। মাথার এক পাশে তীব্র ব্যথা, চোখে ঝিলমিল, আলো বা শব্দে বিরক্তি, বমি বমি ভাব বা আসলেই বমি হওয়া এই উপসর্গ গুলো যদি একসঙ্গে দেখা দেয়, তাহলে বুঝতে হবে এটি মাইগ্রেন হতে পারে।

অনেক সময় আবার অরা (Aura) নামের একটা পূর্ব সংকেত দেখা যায়। অরা বলতে বোঝায় চোখের সামনে আলো ঝলকানি, ঝাপসা দেখা, কখনো কখনো হাত বা মুখে অবশ ভাব। এই ধরণের উপসর্গ থাকলে মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

মাইগ্রেন এর লক্ষণ কি

মাইগ্রেন কেন হয়?

মাইগ্রেনের পিছনে অনেক কারণ কাজ করতে পারে এবং এর বেশির ভাগই ব্যক্তি অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। মানসিক চাপ, ঘুমের অনিয়ম, নির্দিষ্ট কিছু খাবার (যেমন চকলেট, চিজ, ক্যাফেইন), ঋতুচক্রে হরমোনের ওঠানামা এসবই মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। কেউ কেউ দিনের পর দিন কম ঘুম বা অতিরিক্ত মোবাইল/কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে মাইগ্রেনে আক্রান্ত হন। আবার পরিবারে কারো যদি মাইগ্রেন থাকে, তাহলে তার পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

তাই বলা যায়, মাইগ্রেন একটা একক কারণে নয়  বরং বিভিন্ন অভ্যাস, পরিবেশ ও জেনেটিক বিষয়ের মিশ্রণে হয়ে থাকে। নিজের শরীর বুঝে, কোন কারণে ব্যথা বাড়ে সেটা নির্ধারণ করা খুব জরুরি।

মাইগ্রেন এর ব্যাথা কমানোর উপায়

মাইগ্রেনের ব্যথা যদি একবার শুরু হয়, তখন তা অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে কিছু সহজ অভ্যাস এবং সতর্কতা মেনে চললে এই ব্যথা অনেকটাই কমানো সম্ভব। নিচে কয়েকটি কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো যেগুলো আপনি এখন থেকেই অনুসরণ করতে পারেন।

১. ঘুমের রুটিন ঠিক রাখুন

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং জাগা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম কম হলেও যেমন মাইগ্রেন হতে পারে, তেমন অতিরিক্ত ঘুমেও সমস্যা বাড়ে। তাই পরিমিত এবং নিয়মিত ঘুমই সবচেয়ে ভালো।

২. ট্রিগারিং খাবার এড়িয়ে চলুন

চকলেট, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অধিক ক্যাফেইন, চিজ  এই সব খাবার অনেকের জন্য মাইগ্রেনের ট্রিগার হতে পারে। খেয়াল রাখুন কোন খাবারের পর ব্যথা শুরু হয় এবং সেই খাবার গুলো ভবিষ্যতে এড়িয়ে চলুন।

৩. মানসিক চাপ কমান

স্ট্রেস বা মানসিক চাপে মাইগ্রেন আরও বাড়ে। তাই প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম বা হালকা হাঁটার জন্য বরাদ্দ রাখুন।

 ৪. শরীর হাইড্রেট রাখুন

পানি কম খেলে শরীর ডিহাইড্রেট হয়, যা মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ হতে পারে। দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন। চাইলে মাঝে মাঝে নারকেল পানি বা লেবু পানি খেতে পারেন।

৫. ঠান্ডা সেঁক দিন

মাথার যেখানে ব্যথা হচ্ছে সেখানে ঠান্ডা পানির ব্যাগ বা বরফের টুকরো কাপড়ে মুড়ে রাখলে অনেকটা স্বস্তি পাওয়া যায়। এটি রক্তনালী সংকোচন করে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

৬. ডাক্তারের পরামর্শ মতো ওষুধ ব্যবহার

ট্রিপটান, পেইনকিলার বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে যেকোনো ওষুধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?

সবসময় ব্যথা হলে বা ঘন ঘন ওষুধ খেতে হলে, সেটি মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। যদি মাইগ্রেন আপনার কাজ, পড়াশোনা বা দৈনন্দিন জীবন যাত্রায় বাধা সৃষ্টি করে তাহলে অবশ্যই একজন নিউরোলজিস্ট বা চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মাঝে মাঝে আমরা নিজের মতো করে চিকিৎসা চালিয়ে যাই, কিন্তু পেশাদার চিকিৎসা ছাড়া মাইগ্রেন অনেক সময় জটিল রূপ নিতে পারে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, মাইগ্রেন যদিও সম্পূর্ণ নিরাময় যোগ্য নয়, তবে সচেতনতা আর নিয়ম মানলে এটিকে খুব সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। নিজের শরীরকে ভালোভাবে বুঝুন কোন খাবারে, কোন পরিবেশে বা কোন অভ্যাসে আপনার ব্যথা বাড়ে সেটা খেয়াল করুন। সেই অনুযায়ী লাইফস্টাইল ঠিক করুন।

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম মাইগ্রেন কি? মাইগ্রেন এর লক্ষণ কি কি? এবং মাইগ্রেন এর ব্যাথা কমানোর উপায়। এই তথ্য গুলো যদি আপনার কাজে আসে, তাহলে অবশ্যই শেয়ার করুন এবং অন্যদেরও জানার সুযোগ করে দিন। আর আপনার নিজের অভিজ্ঞতা থাকলে, নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা সবসময় শুনতে আগ্রহী!

Disclaimer
We strive to provide accurate information, but we cannot guarantee that all details are always fully updated.

Affiliate Disclosure
This post may contain affiliate links. We may receive a commission if you make a purchase through these links, at no extra cost to you. For more details, please visit our Disclaimer Page.

আইটি বিতান
Nilasha Barua

হাই! আমি নিলাশা, প্রযুক্তি, গ্যাজেট রিভিউ এবং নানা ধরনের বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখি। পাঠকের জন্য সহজ, প্রাসঙ্গিক এবং তথ্যবহুল কনটেন্ট তৈরি করাই আমার প্রাথমিক উদ্দেশ্য।নতুন তথ্য শেয়ার করতে এবং পাঠকদের সাথে জ্ঞান ভাগাভাগি করতে পছন্দ করি।

Post a Comment