লিচু চোর কবিতা - কাজী নজরুল ইসলামের একটি জনপ্রিয় শিশুতোষ কবিতা

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা লিচু চোর, যেটি রচনা করেছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা শিশুসাহিত্যে তাঁর অবদান যেমন গভীর,
It Bitan

লিচু চোর কবিতা , কাজী নজরুল ইসলামের একটি জনপ্রিয় শিশুতোষ কবিতা

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা লিচু চোর, যেটি রচনা করেছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা শিশুসাহিত্যে তাঁর অবদান যেমন গভীর, তেমনি মজার ছড়া ও কৌতুকপূর্ণ কবিতার মাধ্যমে তিনি শিশুদের কাছে অতি প্রিয় হয়ে উঠেছেন।

এই কবিতায় এক দুষ্টু ছেলের লিচু চুরি করতে গিয়ে কেমন বিপদের মুখে পড়ে, সেই কাহিনি হাস্যরসাত্মকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।শিশুদের কাছে লিচু চোর শুধুমাত্র একটি মজার ছড়া নয়, এটি একধরনের শিক্ষামূলক কাব্যও যেখানে চুরির দুঃসাহসের পরিণতি হালকা ছলে শেখানো হয়েছে।

লিচু চোর কবিতা

লিচু চোর
কাজী নজরুল ইসলাম

বাবুদের তাল,পুকুরে
হাবুদের ডাল,কুকুরে
সে কি বাস করলে তাড়া,
বলি থাম একটু দাড়া।

পুকুরের ঐ কাছে না
লিচুর এক গাছ আছে না
হোথা না আস্তে গিয়ে
য়্যাব্বড় কাস্তে নিয়ে
গাছে গো যেই চড়েছি
ছোট এক ডাল ধরেছি,

ও বাবা মড়াত করে
পড়েছি সরাত জোরে।
পড়বি পড় মালীর ঘাড়েই,
সে ছিল গাছের আড়েই।
ব্যাটা ভাই বড় নচ্ছার,
ধুমাধুম গোটা দুচ্চার
দিলে খুব কিল ও ঘুষি
একদম জোরসে ঠুসি।

আমিও বাগিয়ে থাপড়
দে হাওয়া চাপিয়ে কাপড়
লাফিয়ে ডিঙনু দেয়াল,
দেখি এক ভিটরে শেয়াল!
ও বাবা শেয়াল কোথা
ভোলাটা দাড়িয়ে হোথা
দেখে যেই আঁতকে ওঠা
কুকুরও জাড়লে ছোটা!
আমি কই কম্ম কাবার
কুকুরেই করবে সাবাড়!

‘বাবা গো মা গো’ বলে
পাঁচিলের ফোঁকল গলে
ঢুকি গিয়ে বোসদের ঘরে,
যেন প্রাণ আসলো ধড়ে!

যাব ফের? কান মলি ভাই,
চুরিতে আর যদি যাই!
তবে মোর নামই মিছা!
কুকুরের চামড়া খিঁচা
সেকি ভাই যায় রে ভুলা,
মালীর ঐ পিটুনিগুলা!
কি বলিস? ফের হপ্তা!
তৌবা,নাক খপ্তা!

শেষকথা,

লিচু চোর কবিতা টি কাজী নজরুল ইসলামের সৃজনশীল মেধার একটি অসাধারণ নিদর্শন। ছন্দ, কল্পনা ও কৌতুকের মধ্য দিয়ে শিশুদের কল্পনাজগতে তিনি প্রাণ সঞ্চার করেছেন।
এই কবিতার মাধ্যমে একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হয়েছে দুষ্টুমি বা চুরি করলে তার ফল ভোগ করতেই হয়।শিক্ষা ও আনন্দের অপূর্ব সংমিশ্রণে লিচু চোর আজও সমান জনপ্রিয় এবং বাংলা সাহিত্য প্রেমীদের কাছে একটি চিরসবুজ রচনা।

Post a Comment