অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে করে

আজকের আর্টিকেলে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন একটু কল্পনা করি, আপনি ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন।,
It Bitan

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি, কিভাবে শুরু করবো এবং এর সুবিধা

প্রিয় পাঠক, কেমন আছেন সবাই? আজকের আর্টিকেলে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে আলোচনা করবো।  চলুন একটু কল্পনা করি, আপনি ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন। না, এটি কোনো স্ক্যাম না,এটা হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আজকের দিনে, যখন ডিজিটাল দুনিয়া প্রতিটি কোণে বিস্তার লাভ করছে, তখন এই মার্কেটিং মডেলটি হয়ে উঠেছে লাখো মানুষের আয়ের উৎস।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি ব্যবসায়িক মডেল, যেখানে আপনি অন্যের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রমোট করে কমিশন উপার্জন করেন। আপনি নিজে কোনো প্রোডাক্ট তৈরি করছেন না, বরং এমনকি ইনভেন্টরিও রাখতে হচ্ছে না। এক কথায়, এটি একটি উইন-উইন সিচুয়েশন।

আমরা আজকে এই আর্টিকেলে একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শিখবো, কীভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাজ করে, কিভাবে আপনি শুরু করতে পারেন, এবং এর মাধ্যমে কী ধরনের সুবিধা পেতে পারেন। শুধু তাই না, বরং কিছু রিয়েল-ওয়ার্ল্ড টিপসও থাকছে যেগুলো ফলো করে আপনি সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হয়ে উঠতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মূল ধারণা:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সংজ্ঞা:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে বোঝায় এমন একটি মার্কেটিং মেথড, যেখানে আপনি একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা পরিষেবা প্রমোট করে তার বিক্রয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করেন এবং প্রতিটি বিক্রয়ে একটি নির্দিষ্ট কমিশন পান।এটা একদম সহজ ধারণা। আপনি হয়তো কোনো নির্দিষ্ট ই-কমার্স ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট নিজের ব্লগ, ইউটিউব, কিংবা ফেসবুক পেজে রিভিউ করছেন বা শেয়ার করছেন। যখন কেউ আপনার দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে সেই প্রোডাক্ট কিনে, আপনি পেয়ে যান কমিশন।চোখে দেখলে মনে হবে, এত সহজ। কিন্তু এর পেছনে কিছু কৌশল ও পরিকল্পনা রয়েছে, যেটা আপনাকে জানতে হবে সফল হতে।

কিভাবে এটি কাজ করে?

চলুন একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝি, ধরুন আপনি অ্যামাজন এর একটি প্রোডাক্ট যেমন "হেডফোন" রিভিউ করেছেন এবং আপনার ব্লগে একটি অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক যুক্ত করেছেন। যদি কোনো পাঠক আপনার লেখা পড়ে এবং ওই লিঙ্ক দিয়ে হেডফোনটি কিনে, তাহলে আপনি নির্দিষ্ট শতাংশ কমিশন পেয়ে যাবেন।

প্রক্রিয়াটি সাধারণত তিনটি প্রধান স্টেপে বিভক্ত:

1. অ্যাফিলিয়েট সাইন আপ: প্রথমে আপনাকে কোনো কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হতে হবে (যেমন: Amazon Associates, Daraz Affiliate Program ইত্যাদি)।
2. প্রোমোশন: এরপর আপনাকে প্রোডাক্ট প্রমোট করতে হবে ব্লগ, ভিডিও বা সোশ্যাল মিডিয়ায়।
3. কমিশন আর্ন: যখন কেউ আপনার লিঙ্ক দিয়ে কেনাকাটা করে, তখন আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন উপার্জন করেন।

এই পুরো প্রক্রিয়াটি ট্র্যাকিং কুকিজ ব্যবহার করে অটোমেটেডভাবে পরিচালিত হয়।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ধরনসমূহ:

পে পার সেল (Pay Per Sale)

এটাই সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মডেল। এখানে আপনি তখনই কমিশন পাবেন, যখন কেউ আপনার লিঙ্ক থেকে প্রোডাক্ট কিনবে। যেহেতু এটা সরাসরি বিক্রয়ের উপর নির্ভর করে, তাই আপনি সাধারণত এই মডেলে বেশি কমিশন পান।সাধারণত অ্যামাজনের মত প্ল্যাটফর্মে এই মডেল ব্যবহার করা হয়, এবং এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট ভিত্তিক রিভিউ ও ব্লগ কনটেন্ট খুব কার্যকর।

পে পার ক্লিক (Pay Per Click)

এই মডেলে আপনি শুধু ক্লিকের উপর কমিশন পান। অর্থাৎ, একজন ইউজার আপনার শেয়ার করা লিঙ্কে ক্লিক করলেই আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবেন, কিনলো কিনা সেটা বড় বিষয় না।এই মডেল তুলনামূলকভাবে সহজ, কিন্তু এখানকার কমিশন অনেক কম হয়।

পে পার লিড (Pay Per Lead)

এই মডেল অনেকটা Pay Per Sale এর মতই, তবে এখানে টার্গেট থাকে কাউকে কোনো ফর্ম পূরণ করানো, সাবস্ক্রাইব করানো বা অ্যাকাউন্ট খুলতে বাধ্য করা। অনেক সফটওয়্যার কোম্পানি এই মডেল ব্যবহার করে, যেমন: হোস্টিং কোম্পানি, ইমেইল মার্কেটিং টুলস ইত্যাদি।

কেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা উচিত?

প্যাসিভ ইনকামের সম্ভাবনা:

এই কাজের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি একবার কাজ করলেই সেটা থেকে বারবার ইনকাম আসতে পারে। ধরুন আপনি একটা প্রোডাক্ট রিভিউ করে ব্লগ লিখলেন বা ভিডিও বানালেন। এখন সেটা অনলাইনেই থাকবে, এবং প্রতিবার কেউ সেটি দেখে কিনলে আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন। একে বলে প্যাসিভ ইনকাম।যারা অফিস বা চাকরির পাশাপাশি কিছু এক্সট্রা ইনকাম করতে চান, তাদের জন্য এটি দারুণ একটি উপায়।

কোনো প্রোডাক্ট বানাতে হয় না:

এই ব্যবসায় আপনি নিজের প্রোডাক্ট তৈরি করছেন না, স্টক রাখছেন না, এমনকি শিপিং বা কাস্টমার সার্ভিসের চিন্তাও নেই। আপনি কেবলমাত্র একটি মাধ্যম কাস্টমার এবং কোম্পানির মধ্যে একটি সেতুবন্ধন। তাই এই মডেলটা একদম লো-রিস্ক।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি

ঘরে বসে আয় করার সুযোগ:

সত্যি বলতে, আপনি ঘরে বসেই একটি ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। এজন্য কোনো বড় মূলধনের প্রয়োজন হয় না। আর সঠিক পরিকল্পনা থাকলে মাসে হাজার ডলার উপার্জন করাও সম্ভব।

কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন?

সঠিক নিস বা টপিক নির্বাচন:

প্রথমেই যেটা আপনাকে করতে হবে তা হলো, একটা নিস বা টপিক নির্বাচন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, নিস হলো এমন একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের গণ্ডি, যেটা নিয়ে আপনি কনটেন্ট তৈরি করবেন এবং প্রোডাক্ট প্রমোট করবেন। যেমন: ফিটনেস, বিউটি, ট্রাভেল, টেক, হেল্থ ইত্যাদি।

অনেকে ভুল করে একসাথে অনেক টপিক নিয়ে কাজ শুরু করে, কিন্তু এতে ব্র্যান্ড বিল্ড করা কঠিন হয়ে যায়। আপনি যদি শুধু হেল্থ নিয়ে কাজ করেন, তাহলে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সেই নির্দিষ্ট গোষ্ঠী হবে, আর এটা আপনাকে বেশি ট্রাস্ট ও ভিজিটর এনে দেবে।

একটা নিস বাছাই করার সময় নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখুন:

  •  যেটা নিয়ে আপনি আগ্রহী
  •  যেটা নিয়ে বাজারে চাহিদা আছে
  •  যেটার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম সহজে পাওয়া যায়

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে সাইন আপ করা

আপনার নিস ঠিক হয়ে গেলে এখন সময় এসেছে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার। আপনি চাইলে একাধিক প্রোগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। নিচে কিছু জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কের নাম দিচ্ছি:

অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কবিবরণ
Amazon Associatesবিশ্বের সবচেয়ে বড় অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
ClickBankডিজিটাল প্রোডাক্টে বিশেষজ্ঞ
ShareASaleবিভিন্ন কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম একসাথে
CJ Affiliateবিখ্যাত ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট পাওয়া যায়

প্রোগ্রামে সাইন আপ করার পর আপনাকে একটি ইউনিক অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক দেয়া হবে। এই লিঙ্ক থেকেই আপনি ট্র্যাকিং করতে পারবেন কে আপনার রেফারেন্সে প্রোডাক্ট কিনেছে।

কনটেন্ট তৈরি করে প্রমোশন শুরু করা

এটাই হলো মূল খেলা। আপনি যদি কনটেন্ট ভালোভাবে তৈরি না করতে পারেন, তাহলে কেউ লিঙ্কে ক্লিক করবে না। আর কেউ ক্লিক না করলে ইনকামও হবে না।

আপনি চাইলে নিচের মাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন:

  •  ব্লগ পোস্ট (প্রোডাক্ট রিভিউ, তুলনা, গাইড ইত্যাদি)
  •  ইউটিউব ভিডিও (আনবক্সিং, ডেমো, রিভিউ)
  •  ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ
  •  ইনস্টাগ্রাম রিল বা টিকটক ভিডিও

কনটেন্ট তৈরি করার সময় এমনভাবে কথা বলুন যেন আপনি নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন। ইউজারদের কনফিউশন দূর করুন, তাদের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করুন।

সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য স্ট্র্যাটেজি

ব্লগিং এর মাধ্যমে মার্কেটিং

ব্লগিং হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সবচেয়ে পুরনো এবং কার্যকর একটি মাধ্যম। আপনি নিজের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে বিস্তারিত লিখতে পারেন। যেমন:

  • সেরা ৫টি ব্লুটুথ হেডফোন ২০২৫
  • দারাজ থেকে কীভাবে ডিসকাউন্টে প্রোডাক্ট কিনবেন?
  • ওজন কমানোর জন্য সেরা সাপ্লিমেন্ট রিভিউ

এসব পোস্টে আপনি আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক যুক্ত করবেন, এবং SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) করে গুগল থেকে ট্রাফিক আনবেন। ভিজিটর যত বেশি, কমিশনের সম্ভাবনাও তত বেশি।

ব্লগ চালাতে চাইলে নিচের জিনিসগুলো লাগবে:

  • একটি ডোমেইন (যেমন: yourblog.com)
  • হোস্টিং (যেমন: Hostinger, Bluehost)
  • ওয়ার্ডপ্রেস বা অন্য CMS

একটা সময় আপনার ব্লগ এমনভাবে র‍্যাঙ্ক করবে, যে আপনি ঘুমালেও ইনকাম হবে।

ইউটিউব ভিডিও এবং রিভিউ কনটেন্ট

আজকাল সবাই ভিডিও দেখতে ভালোবাসে, তাই ইউটিউব এখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য দারুণ প্ল্যাটফর্ম। আপনি যেকোনো প্রোডাক্ট রিভিউ, টিউটোরিয়াল, কিংবা আনবক্সিং ভিডিও তৈরি করতে পারেন। ভিডিওর ডেসক্রিপশন বক্সে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক দিন, এবং ভিডিওতে সৎভাবে নিজের মতামত দিন।

ভিডিও বানানোর কিছু টিপস:

  • ভালো আলো ও সাউন্ড ব্যবহার করুন
  • নিজের মত করে ব্যাখ্যা করুন
  • পণ্যের ভালো-মন্দ দুই দিক তুলে ধরুন

অনেক ইউটিউবার আছেন যারা শুধু রিভিউ দিয়েই লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক সবই এখন মার্কেটিং টুল। আপনি চাইলে এখানে ছোট ছোট রিল বা পোস্ট দিয়ে প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারেন।

উদাহরণ: ফেসবুকে আপনি যদি ওজন কমানোর গোপন উপায় নামে একটা পোস্ট করেন, এবং শেষে একটা প্রোডাক্ট সাজেস্ট করেন তাহলে সেটা থেকেই অনেক ক্লিক আসতে পারে।সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই কনসিস্টেন্সি বজায় রাখতে হবে, এবং অডিয়েন্সের সাথে এনগেজ করতে হবে।

সফল হওয়ার জন্য কীভাবে অডিয়েন্স বিল্ড করবেন?

বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তোলা:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আপনি যতই ভালো কনটেন্ট তৈরি করুন না কেন, যদি দর্শক আপনার ওপর বিশ্বাস না করে, তবে কেউ আপনার লিঙ্কে ক্লিক করবে না। তাই প্রথমে আপনাকে একজন ট্রাস্টেড সোর্স হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে।

আপনার ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। নিজের ব্যবহার করা প্রোডাক্ট নিয়ে সৎ রিভিউ দিন। মনে রাখবেন, মানুষ সত্য জানতে চায়, হাইপ নয়। যখন কেউ দেখবে আপনি সত্যি কথা বলছেন, তখন তারাই আপনার প্রোডাক্ট কিনবে।

ইমেইল মার্কেটিং এর ব্যবহার:

আপনি যদি আপনার সাইটে বা ইউটিউব চ্যানেলে একটি সাবস্ক্রাইব ফর্ম রাখেন, তাহলে ইউজারদের ইমেইল সংগ্রহ করতে পারবেন। আর এই ইমেইল ব্যবহার করে পরবর্তীতে আপনি নতুন কনটেন্ট বা প্রোডাক্ট রেকমেন্ড করতে পারেন।ইমেইল মার্কেটিং আপনার ইনকাম বাড়ানোর দারুণ একটা উপায়। কারণ এখানে আপনার অডিয়েন্স একদম নির্দিষ্ট এবং আগ্রহী।

কমিউনিটি তৈরি করা:

ফেসবুক গ্রুপ, টেলিগ্রাম চ্যানেল বা ফোরাম ব্যবহার করে আপনি একটি একটিভ কমিউনিটি তৈরি করতে পারেন। এখানে আপনি শুধু প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য না, বরং সাহায্য, টিপস এবং আলোচনা চালাতে পারেন।কমিউনিটি হলে আপনার ফলোয়াররা আপনাকে সরাসরি প্রশ্ন করতে পারবে, এবং এর ফলে আপনি অনেক বেশি ট্রাস্ট অর্জন করতে পারবেন।

কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সফলতার গল্প:

বাংলাদেশে এখন অনেক তরুণ-তরুণী আছেন যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ টাকা উপার্জন করছেন। যেমন:

  • একজন গ্রাফিক ডিজাইনার তার ইউটিউব চ্যানেলে ডিজাইন টুল রিভিউ করে প্রতিমাসে ৫০,০০০ টাকার বেশি আয় করছেন।
  • একজন মায়ের ব্লগ New Mom Hacks নামক সাইটে বেবি প্রোডাক্ট রিভিউ করে বছরে ৮ লাখ টাকা উপার্জন করেছেন।
  • এক কলেজ ছাত্র Daraz এর প্রোডাক্ট প্রমোট করে ফেসবুক পেজ থেকেই প্রতিমাসে ৩০,০০০+ টাকা ইনকাম করছেন।

তাদের সবার মধ্যে একটা মিল তারা শুরু করেছিলো ধৈর্য নিয়ে, এবং নিজের নিস এ নিয়মিত কাজ করে গেছে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন নয় যে আপনি এক রাতেই কোটিপতি হয়ে যাবেন, তবে এটা নিশ্চিতভাবে আপনাকে লং টার্মে ফিনান্সিয়াল ফ্রিডম দিতে পারে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে গিয়ে যে ভুলগুলো এড়ানো উচিত

১. র‍্যান্ডম প্রোডাক্ট প্রমোট করা

অনেকে ভাবেন যত বেশি প্রোডাক্ট, তত বেশি ইনকাম। এটা ভুল ধারণা। সব প্রোডাক্ট আপনার অডিয়েন্সের প্রয়োজনীয় না। এমন কিছু প্রমোট করবেন যেগুলো সত্যিই অডিয়েন্সের কাজে লাগবে।

২. শুধু লিঙ্ক শেয়ার করে ছেড়ে দেয়া

অনেকেই অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। এতে কেউ ক্লিক করে না। আপনি যদি কনটেন্ট না দেন, রিভিউ না দেন তাহলে ইউজার কেন ক্লিক করবে?

৩. SEO এর গুরুত্ব না বোঝা

SEO মানে শুধু গুগলের জন্য কনটেন্ট তৈরি নয়, বরং সঠিক কীওয়ার্ড ব্যবহার, হেডিং অপটিমাইজেশন, স্পিড, মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন সব কিছু একসাথে। আপনি যদি SEO বোঝেন না, তাহলে আপনার কনটেন্ট গুগলে র‍্যাঙ্ক করবে না।

শেষকথা,

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আজকের দিনে ঘরে বসে ইনকাম করার সবচেয়ে কার্যকর এবং সহজ উপায় গুলোর একটি। আপনি যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা করে, ধৈর্য নিয়ে এবং সততার সাথে কাজ করেন তাহলে আপনিও সফল হতে পারবেন। শুরুটা হতে পারে ছোট্ট, কিন্তু একবার আপনি একটি সলিড অডিয়েন্স তৈরি করতে পারলে আয় হবে দীর্ঘমেয়াদী। আর মনে রাখবেন, ইনকাম করার সাথে সাথে আপনি অন্যের সমস্যার সমাধান ও করছেন এটাই এই পেশার আসল সৌন্দর্য।

FAQs

১. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি একজন নতুন লোক করতে পারবে?
হ্যাঁ, একদম নতুন লোকও করতে পারবে। শুধু সময়, চেষ্টা এবং শেখার ইচ্ছা থাকলেই হয়।

২. কোনো ওয়েবসাইট ছাড়াই কি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্ভব?
হ্যাঁ, আপনি চাইলে ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম দিয়েও শুরু করতে পারেন।

৩. কত সময়ের মধ্যে আয় শুরু হয়?
সাধারণত ৩-৬ মাসের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে যদি আপনি ধারাবাহিকভাবে কাজ করেন।

৪. কোন প্ল্যাটফর্ম সবচেয়ে ভালো?
Amazon, ClickBank, ShareASale খুব জনপ্রিয়, তবে আপনি নিজের টার্গেট অনুযায়ী বেছে নিন।

৫. অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক কোথায় পাবো?
প্রতিটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে সাইন আপ করলে আপনাকে ইউনিক লিঙ্ক দেয়া হয়, যেটা আপনি প্রোমোশনে ব্যবহার করবেন।

Post a Comment