মধু পর্ণিমা গাথা

প্রিয় পাঠক -পাঠিকাগণ আজকের এই আর্টিকেলে মধু পর্ণিমা গাথা সর্ম্পকে জানবো। এই পোষ্ট এর মাধ্যমে আপনি সহযেই মধু পর্ণিমা গাথা সহযেই জানতে ও পড়তে পারবেন।,
It Bitan

প্রিয় পাঠক -পাঠিকাগণ আজকের এই আর্টিকেলে মধু পর্ণিমা গাথা সর্ম্পকে জানবো। এই পোষ্ট এর মাধ্যমে আপনি সহযেই মধু পর্ণিমা গাথা সহযেই জানতে ও পড়তে পারবেন। নিচে মধু পর্ণিমা গাথা দেওয়া হলো:

মধু পূর্ণিমা বৌদ্ধধর্মীয় ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য পূর্ণিমা। এটি ভাদ্র মাসেই পালিত হয়। তাই এর অপর নাম ভাদ্র পূর্ণিমা। আসলে বনের একটি বানরের মধুদানের ঘটনা এ পূর্ণিমার বিশেষত্ব। বুদ্ধ মোট পঁয়তাল্লিশ বছর বর্ষাবাস যাপন করেন। তিনি একবার পারলেয়্য নামক বনেও বর্ষাবাস যাপন করেন।

মধু পর্ণিমা গাথা

বুদ্ধের অপরিসীম মৈত্রী ও করুণার প্রভাবে সেখানকার বন্য প্রাণীরাও তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করত। এই বনে পারলেয়্য নামক একটি বড় হাতি ছিল। এই হাতিটি বুদ্ধের সেবা শুশ্রুষা করত। প্রতিদিন বনের নানা সুমিষ্ট ফল ও ফুল এনে বুদ্ধকে পূজা করত। এক বানর হাতিটির প্রতিদিনের এই পূজা, সেবা ও দান দেখে খুশি হলো। 

নিজেও বুদ্ধকে দান দেওয়ার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করল। বানর ভাবল, যেহেতু হাতি ফুল ও ফল দিয়ে বুদ্ধকে পূজা করে, আমি আর একটি নতুন দানীয় দ্রব্য দিয়ে বুদ্ধকে পূজা করব। সে চিন্তা করতে লাগল কী দিয়ে বুদ্ধকে পূজা করা যায়। তখন ভাবল, এমন একটি দান দেব, যেটিতে বুদ্ধ খুশি হবেন।

তখন সে চিন্তা করতে করতে সন্ধান পেল মৌমাছির মৌচাকের কথা। কারণ সেই বনে অনেক মধুপূর্ণ মৌচাক ঝুলে আছে, যেগুলোতে মৌমাছিরা মৌচাক ছেড়ে চলে গেছে। তখন ঐ বানর মধুপূর্ণ একটি মৌচাক এনে শ্রদ্ধাচিত্তে বুদ্ধকে দান করার জন্য সামনে এল।

বুদ্ধ হাত বাড়িয়ে বানরের সেই মধুপূর্ণ মৌচাক হাতে নিলেন। এতে বানর এত যে খুশি হলো সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গাছে গাছে লাফাতে লাগল। হঠাৎ লাফাতে গিয়ে মাটিতে নিচে পড়ে গেল। ফলে তার মৃত্যু হলো। মৃত্যুর পর এই বানর দেবপুত্র হয়ে স্বর্গে জন্মগ্রহণ করলা সেদিন ছিল ভাদ্র পূর্ণিমা।

তাই এই পূর্ণিমা মধু পূর্ণিমা নামে পরিচিত। বৌদ্ধরা এই পূর্ণিমাটিকে খুবই গুরুত্বের সাথে পালন করে। এদিন বৌদ্ধরা উপোসথ শীল পালন করেন। বালক-বালিকা নর-নারী, শিশু-কিশোর সকলেই মধু ও অন্যান্য দানীয় দ্রব্য নিয়ে বিহারে যান।

বুদ্ধকে পূজা দেন। ভিক্ষু সংঘকে ঔষুধপত্র ও ভৈষজ্যাদি দান করেন। দান, সেবা ও পূজার নিদর্শন হিসেবে এই পূর্ণিমার গুরুত্ব বৌদ্ধ ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে।

মধু পর্ণিমা গাথা

মধু পর্ণিমা গাথা

 শ্রীমধু পর্ণিমা তিথি মাধুরীমা ময়,

চারিদিকে মৃদু মৃদু মধু বায়ু বয়।

শাখে শিখি নাচে গাহে প্রীতিভরা আঁখি,

সরোবরে,খেলে সুখে হংস চকা-চকি।

প্রকৃতির রাজ্যপূর্ণ আনন্দ লহরী,

বুদ্ধগুণ স্মরি নাছে ময়ুর-মুয়ূরী।

বাগানে কুসুমরাশি অতিমনোহর,

পুকুর সলির ভরা দেখিতে সুন্দর।

সরসীতে শতদল রয়েছে ফুটিযা,

রাজ হংস পদ্মবনে যায় সাতাঁরিয়া।

ধানের সবুজ মাঠে মৃদু বায়ুবয়,

তাহা চাষীদল সুখে মগ্ন হয়।

সুর্নিমল শুভ্র আভা সারদ চন্দ্রিমা,

বিতরিছে নিরবধি সারদ সুষমা।

এহেন সুন্দর দিনে প্রীতি ফুল্ল মনে,

পূজিতে বাসনা করি বুদ্ধ প্রাণ ধনে।

অরণী বর্ষণ করি অগ্নি উৎপাদিয়া,

সুসিদ্ধ করিয়া জল শুণ্ডেতে আনিয়া।

তাহা মহানন্দে পূজি বুদ্ধ ধনে,

ফুরিল মনের সাধ গজফুল্ল মনে।

কিশলয় শাখ গুচ্ছ শুণ্ডেতে ধরিয়া,

মৃদু মৃদু পাখাা করে দুলিয়া দুলিয়া।

নিত্য নিত্য গজরাজ  বুদ্ধে এরুপে,

পূজিয়া পুলকে তথা দীর্ঘ দিন যাপে।

হেন মধুর দৃশ্য করি দরশন,

পূজিতে আকুল হয়ে বানর তখন।

মধুচক্র হাতে করি বনের বানর,

আসিয়া শ্যী বুদ্ধে পূজে হরষি অন্তর।

বানরের ভক্তি শ্রদ্ধা আর মধু দানে,

বনস্থলী প্রকম্পিত সাধুবাদ দানে।

এহেন পূজার দৃশ্য হেরী বন্য প্রাণী,

হিংসা ক্রোধ ভুলি সবে মৈত্রী ধ্বনি।

স্বর্গে থাকি এই পূজা দেখি দেবগণ,

সাধুবাদ করে পুষ্প বরিষণ।

এই সাথে মোরা সবেহয়ে এক মন,

আনন্দেতে সাধুবাদ দাও গনে ঘন।

আজি মোরা মধু দানে ভক্তি শ্রদ্ধাভরে,

পূজিতেছি শ্রীবুদ্ধকে মোক্ষ লাভ তরে।

মধুদান এ পূজায় জন্মে জন্মে যেন,

সুমধুর কণ্ঠ স্বরে জিনি ত্রিভূবন।

যে কোন ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এই মধু পর্ণিমা গাথাটি আপনার পরিচিতদেরকে শেয়ার করুন। যাতে সবাই জানতে পারে ও শিখতে পারে।

Post a Comment